বাইরের খাবারে এ সময় সতর্কতা

রোগব্যাধি

খাবার থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর পক্ষে-বিপক্ষে এখনো জোরালো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। করোনা ছড়ায় মানুষ থেকে মানুষে, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি এবং কথা বলার সময় মুখনিঃসৃত তরল কণার (ড্রপলেট) মাধ্যমে। এ ছাড়া ভাইরাস লেগে আছে এমন কিছুর সংস্পর্শে আসার পর হাত দিয়ে নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করলেও সংক্রমণ ঘটে। ঠিক এ কারণেই রেস্তোরাঁ, হোটেল, খাবার পরিবহন ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এসব বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও কিছু নির্দেশিকা আছে।

• হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার প্রস্তুত, পরিবহন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত সবাইকে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে হবে। যেকোনো প্রকার অসুস্থতায় কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

• কাজের জায়গায় প্রবেশের আগে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে কনুই পর্যন্ত। রেস্তোরাঁর কর্মী ও বিক্রেতার মুখে মাস্ক এবং হাতে দস্তানা থাকতে হবে।

• খাবার প্রস্তুতের জায়গা হতে হবে খোলামেলা, কর্মীদের পারস্পরিক দূরত্ব থাকতে হবে কমপক্ষে ৩ ফুট।

• মুখোমুখি হয়ে কাজ করা চলবে না। সবাই একই দিকে মুখ করে কাজ করবেন। এক সারির পেছনে আরেক সারি থাকলে সে ক্ষেত্রেও সবাই একই দিকে মুখ করে কাজ করবেন।

• যেকোনো ড্রয়ার, হাতল, তৈজসপত্র ধরার আগে-পরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে।

• দৃশ্যমান জায়গায় পালনীয় স্বাস্থ্যবিধি এবং করোনার উপসর্গগুলো লিখিত ও ছবির মাধ্যমে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে সবাই সেটা দেখে-পড়ে সতর্ক হতে পারেন।

• খাবার প্রস্তুতের পর তা দ্রুত প্যাকেটজাত করে ফেলতে হবে। প্রদর্শনের জন্য খোলা জায়গায় নয়, কাচঘেরা শোকেসে খাবার রাখতে হবে।

• যাঁরা খাদ্যদ্রব্য কিনতে আসবেন, তাঁরা আগে থেকেই তালিকা করে আনবেন কিংবা ফোনে জানিয়ে রাখবেন। এরপর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খাবারের সরবরাহের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় অপেক্ষা করবেন। কাউন্টারে ভিড় করা চলবে না।

• টাকাপয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেনের অ্যাপ অথবা ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। টাকা স্পর্শ করে সেই হাত দিয়ে খাবার ডেলিভারি দেওয়া বা নেওয়া যাবে না।

• অর্ডারের ভিত্তিতে বাড়িতে বা অন্য কোথাও খাবার ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্যাকেটগুলো একজন গাড়িতে ওঠাবেন এবং আরেকজন দূরত্ব বজায় রেখে তা তদারক করবেন।

• খাবার ডেলিভারি দেওয়ার সময় আগে থেকেই প্যাকেটগুলো কোথায় রাখতে হবে জেনে নিন এবং টাকাপয়সা লেনদেনও একইভাবে দূরত্ব বজায় রেখে করবেন। যদি গাড়িচালক এবং খাবার সরবরাহকারী একই ব্যক্তি হন, তাহলে তিনি অবশ্যই খাবারের প্যাকেট ধরার আগে হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।

• কাজের জায়গা, রেস্তোরাঁর মেঝে, কাউন্টার বা যেসব জায়গায় ঘন ঘন হাতের স্পর্শ লাগে, সেসব জায়গা নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

• রেস্তোরাঁ-হোটেলের সব কর্মীকে কয়েক ভাগে রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন করতে হবে।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন), গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *