প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফিজিওথেরাপিকে সম্পৃক্ত করার জোরালো দাবি জানিয়েছেন দেশের বিপিটি ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকরা।
তারা বলেন, কোভিড-১৯ (করোনা) চিকিৎসায় কার্ডিও পালমোনারি ফিজিওথেরাপি এবং মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও কার্ডিও রেসপিরেটরি ফিটনেস বাড়াতে জেনারেল ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব অপরিসীম।করোনা চিকিৎসায় উন্নত বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম শাখা ফিজিওথেরাপিকে সম্পৃক্ত করা হলেও আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের কোভিড-১৯ চিকিৎসা টিমে সম্পৃক্ত করা হয়নি। জরুরি এই শাখাটি ছাড়া আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা স্থাপন করা সম্ভব নয়, কারণ চিকিৎসা ব্যবস্থা একটি টিমওয়ার্ক। এখানে যার যার কাজ তাকে করতে না দিলে দেশের মানুষ কখনো উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিক চিকিৎসা পাবে না। তাই সরকারের কাছে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের জোরালো আবেদন, আমাদেরকে দেশের মানুষের চিকিৎসা করতে সুযোগ দিন এবং এই মুহূর্তে দেশবাসীকে সেবা দেয়া আমাদের অধিকার।
বরাবরই স্বাস্থ্যখাতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকরা রোষানলের শিকার। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের কেনো সরকারিভাবে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না। কেনই বা অজ্ঞাত কারণে ৮ বছর আগে মহাখালীতে দেয়া সরকারের বরাদ্দকৃত জমিতে বাজেটে টাকা পাস হওয়া সত্ত্বেও ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিওথেরাপির কাজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুরু করছে না।
বাংলাদেশে ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি (বিপিটি) ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্টদের যদি স্বাস্থ্যসেবায় সরকারিভাবে তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী স্বতন্ত্র পেশাজীবী হিসেবে নিয়োগ না দেয়া হয় কিংবা ফিজিওথেরাপিস্টদের কাজ করতে দেয়া না হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি দয়া করে ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি (বিপিটি) কোর্সটি বন্ধ করে দিন। এতে করে পরবর্তীতে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ (৫) বছরের ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি (বিপিটি) কোর্সটিতে ভর্তি হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ অন্যান্য শাখার চিকিৎসকদের রোষানলে পড়ে জীবন ধ্বংস করবে না।
কোভিড-১৯ বা করোনা চিকিৎসায় উন্নত বিশ্বে চিকিৎসক টিমে একজন করে রেসপিরেটরি ফিজিওথেরাপিস্ট রয়েছেন, কিন্তু আমাদের দেশে এ বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না। এছাড়া করোনা-পূর্ববর্তী সময়েও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়া বারবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিপিটি ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্টদের সরকারি নিয়োগ এখন সময়ের দাবি এমনটাই বলছিলেন সম্মিলিত ব্যাচেলর (বিপিটি) ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক পরিষদের আহবায়ক ডা: মহসীন কবির।
তিনি আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে ১৯৭২ সালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করতে পঙ্গু হাসপাতালে ফিজিওথেরাপির উপর মেডিকেল ডিগ্রি কোর্সটি চালু হলেও ৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর কোর্সটি অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ৯০-এর দশকে আবার বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপির ওপর মেডিকেল ডিগ্রি কোর্সটি চালু হয়।
করোনায় গণমানুষের সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সম্মিলিত ব্যাচেলর (বিপিটি) ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক পরিষদ আগামী ১০ জুলাই শুক্রবার ধানমন্ডির পিপিআরসিতে কোভিড-১৯ (করোনা) চিকিৎসায় ফিজিথেরাপির গুরুত্ববিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনা এবং কার্ডিও পালমোনারি ফিজিওথেরাপি’র উপর একটি ফ্রি ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে।