‘দাবী মোদের একটাই চাকুরী রাজস্বকরন চাই ’ শ্লোগান মুখে নিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়াধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের শত শত কর্মচারী ১৮ ফেব্রুয়ারী ফাউন্ডেশনের মূল ফটকের সামনে মানব বন্ধন করেন। আন্দোলনকারীদের মূখে বলতে শোনা যায় এটা আমাদের দাবী নয় এটা আমাদের অধিকার।
এ ছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুই নয়ন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্যকেন্দ্র রাজস্ব অন্তর্ভূক্তকরণ এ ধরনের নানান পোষ্টার হাতে নিয়ে মানব বন্ধন করতে দেখা যায়। মানব বন্ধন শেষে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর স্বারক লিপি উপস্থাপন করেন-সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়াধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের আওতায় ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর সময়কালে সারা দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় সর্বমোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে, যা স্থানীয় ভাবে সুনামের সাথে প্রতিবন্ধী হাসপাতাল নামে পরিচিতি লাভ করেছে।এসব কেন্দ্রে ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, ম্পীচ গ্যান্ডল্যাংগুয়েজ থেরাপি এর মাধ্যমে অটিজমেশিকার শিশু/ব্যক্তি এবং অন্যান্য ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের বিনামূল্যে নিয়মিত বিভিন্ন ধরণের থেরাপিউটিক সেবা প্রদান করছে।এ ছাড়া হিয়ারিং টেষ্ট, ভিজুয়্যাল টেষ্ট, কাউন্সেলিং এবং বিনামূল্যে সহায়ক উপকরন হিসেবে কৃত্রিম অঙ্গ, হুইল চেয়ার, ট্রাই-সাইকেল, ক্রাযাচ, স্ট্যান্ডিং ফেম, সাদাছড়ি, এলবো র্ক্যাচ ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে তাদের চলনক্ষম করে তোলা হচ্ছে।
বিগত ২ এপ্রিল ২০১০ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন করেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুঃস্থ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের ফিজিওথেরাপি সেবা পৌছে দেওয়ার জন্য ৩২টি মোবাইল থেরাপিভ্যান নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবা দানের ফলে সাফল্য অর্জনের হার অনেক বেশি। একই সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের নির্দেশনা মতে নানামুখী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। উন্নয়ন মেলা; তথ্য মেলা; ডিজিটাল মেলায় সেবা ক্যাটাগরীতে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রথম স্থান দ্বিতীয় স্থান এবং তৃতীয় স্থানও অধিকার করেছে। এ সকল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে সরকারের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রকে রাজস্ব বাজেটের আওতায় স্থায়ীরুপ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে। অন্যথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা জনগন এ সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
আন্দোলনকারীদের লিখিত বক্তব্যে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের যৌক্তিকতায় কতিপয় তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো,প্রতিটি সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে ১২জন জনবলের পদ রয়েছে। সেই হিসেবে ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে ১,২৩৬ জনজনবলের পদ রয়েছে। এ সকল কেন্দ্রের জনবল সরকারী বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও দীর্ঘদিন যাবৎ কোন প্রকার বর্ধিত বেতন (ইনক্রিমেন্ট), শ্রান্তিবিনোদন ছুটি ও ভাতা না থাকায় একই বেতন ও ভাতায় (সাকুল্য বেতনে) কর্মরত আছেন বিধায় তাদের মধ্যে বর্তমানে অসন্তোষ বিরাজ করছে।বর্তমানে কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনেকের সরকারী চাকুরীতে প্রবেশের বয়স সীমাও শেষ হয়ে গেছে।২. প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে কর্মকর্তা কর্মচারীগণ স্ব স্ব ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষিত (শ্নাতোকত্তর/৪ বছরের ডিপ্লোমাধারী)। প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারীর উপর একাধিক পরিবার/পারিবারিক সদস্য নির্ভরশীল। বর্তমান সাকুল্য বেতনে কর্মরত থেকে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। ৩. প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভবিষ্যত চাকুরীর নিশ্চয়তা না থাকায় তারা হতাশায় ভগছেন। ২০০৯ সালে সেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হলেও অদ্যবধি তেমন কোন কার্যকর অগ্রগতি হয়নি। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদর্ত দিকনির্দেশনাও বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নিন্মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সমূহ উল্লেখ করা হলো- প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের জনবলের চাকুরী স্থায়িত ও নিরাপত্তার বিষয়কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক একাধিকবার জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনে পত্র প্রেরণ করে এবং এ বিষয় তাগিদ প্রদান করে।
গত ২৩/১১/২০১৬খ্রিঃ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ ছাড়করন পত্রের গ) ক্রমিকে “কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদ রাজস্ব খাতে স্থানান্তর/পদ সৃজনের বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে”মর্মে উল্লেখ রয়েছে (সংলাগ-ক)।এ ছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের গত ০৩/১২/২০১৮ তারিখ জারিকৃত পরিপত্রে উন্নয়ন প্রকল্পের অত্যাবশ্যকীয় জনবলের পদ সৃজন ও নিয়োগের বিষয় নির্দেশনা রয়েছে (সংলাগ-খ)।৪. উল্লেখ্য যে গত ০৮/০৩/২০১৮ খ্রিঃ এ অর্থমন্ত্রণালয়ের নথি দৃষ্টে দেখা যায় ৭৩ নং ক্রমিকের ক) ও খ) নং কলামে সেবা কেন্দ্রে জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের বিষয় অগ্রগতি ও সরকারের এই মহতী উদ্দ্যোগ ও ব্যতিক্রমধর্মী এ সেবাকার্যক্রম ভবিষ্যতে অব্যহত রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এর জনবল কাঠামো অনুমোদন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছে (সংলাগ-গ) । আবার গত ২৯ জুলাই,২০২০খ্রি. ১ম কিস্তি অর্থ ছাড়করণ পত্রে শর্তাবলী (গ) এর ২নং এ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদ রাজস্ব খাতে স্থানান্তর/ পদ সৃজনের শর্ত উল্লেখ রয়েছে(সংলাগ-ঘ)। স্বয়ং অর্থমন্ত্রণালয়ের যেহেতু এ বিষয়ে ইতিবাচক সেহেতু জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক যে কোন ধরনের উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করা যায়।
প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মচারীদের মানববন্ধন ও সারক লিপি প্রদান
Please follow and like us: