বাংলাদেশের করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সঙ্গে রাশিয়া ও সৌদি আরবের করোনার মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. সমীর কুমার সাহা। ভাইরাসটির জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের পর এই তথ্য জানালো সংস্থাটি এই নির্বাহী পরিচালক।
১২ মে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের তথ্য জানা যায় চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। এতে ভাইরাসটির গতি প্রকৃতি নির্ণয় করতে পারবেন গবেষকরা।
এ বিষয়ে ড. সমীর কুমার সাহা জানান, বাংলাদেশে উদঘাটিত হওয়া নমুনাটির জিনোম সিকোয়েন্স করে এর সাথে রাশিয়া ও সৌদি আরবের ধরনের মিল পাওয়া গেছে। আমরা এখন পর্যন্ত একটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে এ মিল প্রত্যক্ষ করেছি। আরো কিছু নমুনার সিকোয়েন্সিং প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরো জানান, এটি বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়, এই প্রথম বাংলাদেশ একটি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করলো। আগামী দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে আমরা করোনাভাইরাসের আরো ১৫টি জিনোম সিকোয়েন্স সম্পন্ন করতে পারবো। এর ফলে বাংলাদেশে যে করোনাভাইরাস, সেটার পুরো অবয়ব বোঝা যাবে। এর শক্তি কতটুকু সেটা বোঝা যাবে এবং এটা কোন গতিতে চলবে, এর গতি প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা করতে পারবো।’
ড. সমীর কুমার আরো বলেন, ‘এই জিনোম সিকোয়েন্সের ফলে যখন ভ্যাকসিন আসবে, তখন আমাদের সবচেয়ে উপকার হবে যে, কোন ভ্যাকসিনটা আমাদের জন্য কাজে লাগবে, কোনটা আমাদের কাজে লাগবে না সেটা আমরা বুঝতে পারবো। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা এবং এই ভাইরাস মোকাবিলায় পরিকল্পনা সাজানো আমাদের জন্য সহজ হবে।’
করোনা শক্তিশালী হওয়ার পেছনে ছিল ভাইরাসটির জিন। বারবার জিন পাল্টে ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতো করোনা। জিন রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় কেন করোনা জিন পাল্টায় ও কীভাবে জিন পাল্টায় তা জানা যাবে।
এই দলের আরেক গবেষক ও অণুজীব বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এমন একটি গবেষণা আমরা করতে পারলাম। এজন্য, একটি টিম অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। এখন ভাইরাসটির গতিপ্রকৃতি ও রূপান্তর সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট ধারণা পাবো।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। চলমান এ ছুটি আরেক দফা বাড়িয়ে ঈদ পর্যন্ত নেয়া হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী মঙ্গলবার (১২ মে) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩২ জন। এছাড়া এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪০ জনের শরীরে।