বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ বিল পাস

নিউজ

বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে আইনের খসড়া জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। নতুন আইনে প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

সোমবার (২৯ আগস্ট) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ বিল-২০২২’ পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে বিলের উপর দেয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন নবনির্বাচিত ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু।

গত ৩০ মার্চ বিলটি সংসদে তোলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গত বছরের ৩ মে খসড়া এই আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজগুলো এখন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা এবং অপারেশন গাইডলাইনস-২০১১। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং অপারেশন গাইডলাইনস-২০০৯ এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এই দুটি নীতিমালার উপর ভিত্তি করে নতুন আইন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বেসরকারি মেডিকেলে শিক্ষার্থী ভর্তির নিয়ম

মন্ত্রী জানান, নতুন আইন অনুযায়ী, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত হবে ১:১০। এসব প্রতিষ্ঠানে কোনো বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদিত পদের শতকরা ২৫ শতাংশের বেশি রাখা যাবে না।

আইনে বলা হয়, মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজের পাঁচ শতাংশ আসন অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে এই আসনের ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা ভর্তির শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সরকারকে জানাতে হবে। বেসরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে অন্যূন ৫০ জন শিক্ষার্থীর আসনবিশিষ্ট হতে হবে।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় কমপক্ষে দুই একর এবং ডেন্টাল কলেজের জন্য এক একর জমি থাকতে হবে। অন্য এলাকায় এই জমির পরিমাণ চার একর ও দুই একর হতে হবে। এই জমি সংশ্লিষ্ট কলেজের নামে নিরঙ্কুশ, নিষ্কণ্টক, অখণ্ড ও দায়মুক্ত হতে হবে। মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ এবং এর অধীন পরিচালিত হাসপাতাল কোনোভাবেই ইজারা বা ভাড়া নেয়া জমিতে বা ভবনে স্থাপন করা যাবে না।

নতুন আইন অনুযায়ী, মেডিকেল কলেজের নামে অন্যূন ৩ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের নামে ২ কোটি টাকা যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে সংরক্ষিত থাকতে হবে। এরইমধ্যে স্বীকৃতি পাওয়া মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের নামে এক কোটি টাকা জমা থাকতে হবে। তবে ৫০ আসনের বেশি অতিরিক্ত প্রতি আসনের জন্য মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে ৩ লাখ টাকা এবং ডেন্টাল কলেজের জন্য ২ লাখ টাকা সংরিক্ষত তহবিল হিসেবে জমা থাকতে হবে। ব্যক্তি নামে মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজের ক্ষেত্রে আরও এক কোটি টাকা সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে জমা থাকতে হবে।

আইন না মানলে যে শাস্তি

আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের সব শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি সরকার নির্ধারণ করবে। কোনো মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজ কাউন্সিলের অনুমোদন না নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

পাঁচ শতাংশ আসন অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য না রাখলে এবং অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলেও একই দণ্ড। সরকারের অনুমতি ছাড়া নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করলে ১০ লাখা টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগে স্থাপিত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে আইনটি কার্যকর হওয়ার এক বছরের মধ্যে এর অধীনে অনুমোদন নিতে হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *